এক ডলারে কাগজের মাইক্রোস্কোপ!

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন নিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় আলোচনা করি। নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সবসময়ই আমাদেরকে অবাক করে, আনন্দ দেয়, আমাদের জীবনযাপনকে সহজ করে, এমনকি আমাদের অনুপ্রানিত করে। মাঝে মাঝে খুব ছোট কিছু দিয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু তৈরি করা যায়, যা মানবকল্যানে অবদান রাখে। আজ আমরা এমনই একটি উদ্ভাবন সম্পর্কে জানবো।

স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পদার্থবিজ্ঞানী “মনু প্রকাশ“, বিজ্ঞানকে সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে উচ্চ প্রযুক্তির ডিভাইসগুলোর কম মূল্যের সুলভ্য সংস্করন তৈরি করে থাকেন।

কিন্তু তাঁর সব থেকে জনপ্রিয় আবিষ্কার হলো, একটি পকেট সাইজের মাইক্রোস্কোপ, যা তিনি গুটানো কাগজ বা ফোল্ডেড পেপার দিয়ে তৈরি করেছেন, যাকে বলা হয় ফোল্ডস্কোপ, আশ্চর্যজনকভাবে যা এখন পর্যন্ত দুর্লভ।

মনু প্রকাশ এবং তাঁর সহকর্মীরা সম্প্রতি একটি কিকস্টার্টার ক্যম্পিং শুরু করেছেন, যেখান থেকে যে কোন ব্যক্তি মাত্র ১৫ ডলার খরচ করে নিজের জন্য একটি পকেট সাইজের ফোল্ডেবল মাইক্রোস্কোপ কিনে নিতে পারেন এবং ফোল্ডেবল মাইক্রোস্কোপ এর ২০ টি প্যাকেট মাত্র ২০ ডলারে কিনে সংরক্ষণ করতে পারেন।

যদিও প্রতিটি ডিভাইস তৈরি করতে খরচ হয়েছে মাত্র ৫৭ থেকে ৯৭ সেন্ট (লেন্সের মেগনিফিকেশন বা বড় করে দেখানোর ক্ষমতার উপর নির্ভর করে), বাড়তি যা খরচ হয় তা নির্ভর করে বাড়তি কিছু সাইন্টিফিকেশন টুলস এর উপর যেমন, মাইক্রোস্কোপ স্লাইডার, টুইজার বা চিমটা, পিপেট এমনকি অবজারভেশনের জন্য জার্নাল এর খরচ ইত্যাদি। এর সমর্থকদের পেমেন্টের একটা বড় অংশ দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্কুল এবং কমিউনিটির জন্য ফোল্ডস্কোপ তৈরি করা হবে।

তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে টেকসই, বহনযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের সাইন্টিফিক ডিভাইস এর সুবিধা প্রদান করা।

কাগজের এই মাইক্রোস্কোপ তৈরি হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। কিন্তু তাদের ক্যাম্পিং করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, অনেক বেশী মানুষকে এর সুবিধা প্রদান করা।

তাত্ত্বিকভাবে, যে কেও এটি মাত্র ১০ মিনিটে তৈরি করতে পারবে। কারন এর টেম্পলেট এবং এটি কি কি দিয়ে তৈরি তা অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।

কিন্তু বাস্তবিকভাবে, অনভিজ্ঞদের জন্য এটি তৈরি করা সহজ নয়। কারন এর কিছু কাজ যেমন, কুঁচকানো, কাটা এবং কিছু সূক্ষ্ম প্রিন্টিং ইত্যাদি বেশ কঠিন। ২০১৭ সালে তাদের এই ফোল্ডস্কোপ ১ মিলিয়ন তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় এই ছোট ছোট আবিষ্কারগুলোও অনেক বড় অবদান রাখে। বিজ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক বিভিন্ন ডিভাইস যত আমাদের হাতের নাগালে আসবে আমরা তত বেশী বিজ্ঞান চর্চায় মনোনিবেশ করতে পারবো। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানীও মানব কল্যাণে এই প্রচেষ্টাই করে চলেছেন।

মন্তব্য নেই

আপনার মন্তব্য লিখুন

বিভাগ সমূহ
সম্প্রতি প্রকাশিত
পাঠকের মতামত
আর্কাইভ