উদ্ভাবনী চোখে আগামীর বাংলাদেশ (পর্ব-১) – প্রসঙ্গ দুর্নীতি

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দরবারে রোল মডেল। চোখের সামনে বিশ্ববাসী দেখছে একটি দেশ কিভাবে তরুণদের উদ্ভাবনী প্রকল্পের অাইডিয়া গুলোকে জনগণের সেবার লক্ষ্যে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় বাস্তবায়নের  মাধ্যমে ডিজিটাল ভার্সনে রূপান্তরিত হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৬৫ ভাগ কর্মক্ষম জনগোষ্টী যাদের সিংহভাগের বয়স ৩৫ বছরের মধ্যে। তাই বেশ জোর দিয়েই বলা যায় বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাকে যদি কোন অপশক্তি পরিকল্পিতভাবে পেছন থেকে টেনে ধরে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে তাহলে না চাইলেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির দিকে।
বর্তমান সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সর্বস্তরে উদ্ভাবনী চর্চার বিকাশ সাধান এবং বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে তরুণদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে সেখানে আলোচনার টেবিলে না চাইলেও একটা প্রসঙ্গ ঘুড়ে ফিরে বারবার চলে আসে আর তা হলো দুর্নীতি।
“দুর্নীতি” যার অপর নাম আসলে চুরি সমাজের জন্য বিষফোঁড়ার মতো। কোনভাবেই যেন এই দুর্নীতিকে আটকানো যাচ্ছে না। একটা সুন্দর আগামীর বাংলাদেশে নিশ্চই দুর্নীতি থাকতে পারে না। একটু কি ভিন্নভাবে চিন্তা করা যায় না?

প্রসঙ্গ “দুর্নীতি” যার অপর নাম আসলে চুরি সমাজের জন্য বিষফোঁড়ার মতো

কেউ চুরি করে স্বভাবে, কেউ এমন কঠিন অবস্থায় থাকে যে তার কাছে মনে হয় চুরি করা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই, কেউ আবার চুরি করার মাঝে বিনোদন ও আনন্দ খুঁজে পায়।এক ধরনের চোর আছে আমাদের সমাজে যারা হর-হামেশাই চুরি করেন, তা আবার যেনতেন চুরি নয় একেবারে পুকুর চুরি। ওনারা কিন্তু কখনো অনুভবই করেন না কিছু চুরি করছেন।
 
অন্য এক ধরনের চোর আছে যারা আসলে চোর না, ওদের বিবেক বুদ্ধি মানবিকতা, নৈতিকতাবোধ, পরিশ্রম করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের সামর্থ সবই আছে কিন্তু প্রচলিত কঠিন নিয়মের যাতাকলে পড়ে ওরা চোর হয়ে যাচ্ছে। নেহাত ওদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয় আমাদের সমাজে।
 
যা হোক, ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ হিসেবে আমার মনে হয় চুরি ছোট বড় যে সাইজেরই হোক না কেন চুরি করতে পারা লোকগুলো সবাই কিন্তু যথেষ্ট মেধাবী। এই মানুষগুলোর যদি তাদের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সৎ উপায়ে তাদের সময়টা ব্যয় করে সমপরিমান অর্থ এবং সম্মান অর্জনের সুযোগ থাকতো হয়তোবা তাদের চুরি করার প্রয়োজন হয়তো পরতো না।
 
ধরুন আপনাকে আপনার এক বন্ধু বললো একটা ট্রেনিং প্রোগ্রামে ট্রেনার হিসেবে ১ দিন কাজ করার জন্য, বিনিময়ে ২০০০/= টাকা পাওয়া যাবে আর অন্য বন্ধু বললো চল দোস্ত আজ রাতে করিমের আম বাগানে অপারেশন চালাই, অপারেশন সাকসেস হলে সবাই ভাগে ২০০০/= টাকার মতো পাওয়া যাবে। এখন কি করবেন ?
 
১ম কাজটি নৈতিকতা সমর্থন করে এবং যথেষ্ট সম্মান পাওয়ার সুযোগ আছে। ২য় টি নৈতিকভাবে সমর্থন যোগ্য নয়।
২টি কাজেরই অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাবনা সমান কিন্তু প্রথমটি যথেষ্ট সম্মানের আর অন্যটি সম্মান হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
 
নিশ্চই ১ম বন্ধুর প্রস্তাবকেই সবাই সমর্থন করবেন।
আমরা যদি আমাদের বাস্তব জীবনে প্রতিটি নাগরিকের জন্য তাদের মেধা, যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি, সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে যে যে পেশায় থাকুক না কেন  সৃজনশীল উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত থাকার  মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে , পেশাগত ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি করা যায় তাহলে হয়তো এমন দিনের স্বপ্ন দেখা যেতেই পারে যেখানে দুর্নীতির করার যথেষ্ট সুযোগ থাকবে কিন্তু দুর্নীতি করার জন্য যে রুগ্ন মানষিকতা আর সময় দরকার তা কারো থাকবে না।

১টি মন্তব্য

আপনার মন্তব্য লিখুন

সর্বশেষ প্রকাশিত