আমাদের কম্পিউটার আর মোবাইল ডিভাইস গুলোকে একীভূত করবে ক্লাউড কম্পিউটিং

বিশ্লেষকরা ধারণা করেন যে, আমাদের ভবিষ্যতের কম্পিউটার এবং মোবাইল ডিভাইস সমূহে  ক্লাউড কম্পিউটিং এর একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।

ক্লাউড কম্পিউটিং হলো এমন একটা প্রদ্ধতি যেখানে কোন একটি কম্পিউটারে সম্পাদিত  কাজ বা কমান্ড অন্যত্র অন্যকোন কম্পিউটারে সম্পাদিত এবং সংরক্ষিত হয়। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে এধরণের সার্ভিসের সাথে যুক্ত হওয়া যায় যেখানে, চাহিদা অনুযায়ী কম খরচে কাজ সম্পাদনের জন্য আর্কিটেকচার, ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং সফটওয়্যার রয়েছে।

মূলত  ক্লাউড কম্পিউটিং হলো ইন্টারনেটভিত্তিক কম্পিউটিং, যেখানে একজন ব্যবহারকারী তার কম্পিউটারে বসে কোন একটা কাজের নির্দেশ প্রদান করেন কিন্তু সম্পূর্ন কাজটি সম্পাদন এবং প্রসেসিং এর জন্য তার নিজের কম্পিউটার ছাড়াও নেটওয়ারর্কের মাধ্যমে সংযুক্ত বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন অন্য কম্পিউটারের দক্ষতা, প্রসেসিং ক্ষমতা, গতি, মেমরি এবং অন্যান্য পেরিফেরালস সমূহ ব্যবহার করেন । এটি একটি সর্বব্যাপী সক্রিয় মডেল। যা চাহিদা অনুযায়ী কম্পিউটার রিসোর্সে একসেস করতে সক্ষম এবং যার মাধ্যমে স্বল্প প্রচেষ্টায় বিপুল পরিমান সেবা গ্রহণ করা যায়। cloud-computing-security

ক্লাউড কম্পিউটিং  ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রসেসিং এর জন্য বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে যেসকল ডিভাইস বা হার্ডওয়্যার শেয়ার করা হয় তা হতে পারে নিজস্ব  অথবা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে।  রিসোর্স সমূহ থাকতে পারে ব্যবহারকারী থেকে কিছুটা দূরে অথবা বিশ্বের এক শহর থেকে অন্য শহরে। ক্লাউড কম্পিউটিং অর্থনৈতিক মাপকাঠি এবং সম্পদ বন্টনের সমন্বয়ের উপর নির্ভর করে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর সুবিধা হলো এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের দক্ষতা এবং প্রসেসিং স্পিড  বৃদ্ধি করে স্কেলিং এবং আপগ্রেড করে। তাই ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে পরিচালনা করার খরচ কম হয় এবং জটিলতা দূর হয়। এতে কম্পিউটারের প্রসেসিং গতি, মেমরি ধারণক্ষমতা, সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে আনে।

ক্লাউড কম্পিউটিং এর মাধ্যমে যেকোনো ধরণের বা যেকোনো আকারের ফাইল সংরক্ষণ করা, গেম খেলা, এপ্লিকেশন ডেভলপ করা, ভিডিও এবং শব্দ প্রক্রিয়াকরণ, বৈজ্ঞানিক গণনা করা অথবা যেকোনোকিছু করা যায় শুধুমাত্র একটি সাধারণ মানের কম্পিউটার এমনকি একটি স্মার্টফোন ব্যবহার করেই।

কেমন হতো, যদি  আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ নিজেদেরকেই উৎপন্ন করতে হতো?

সেক্ষেত্রে আমাদের  ছোট ছোট পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করতে হতো  প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করার জন্য। এতে প্রচুর অর্থ ব্যয় এবং সময় অপচয় সহ প্রচুর ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হতো অথচ সেই অনুপাতে চাহিদা অনুযায়ী ফলাফল পাওয়া যেত না।shutterstock-cloud-computing

বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা যেমন একটা  পাওয়ার প্লান্টের সাহায্যে অনেক গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করে থাকি ঠিক একইভাবে   ক্লাউড কম্পিউটিং এর তুলনা করা যেতে পারে। ক্লাউড কম্পিউটিং এর ক্ষেত্রে একটা বড় অাকৃতির উচ্চ প্রসেসিং স্পিড, উচ্চ কনফিগারেশন, অনেক বেশি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সার্ভার কম্পিউটার এর মাধ্যমে অনেক জন কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে সেবা প্রদান করা হয়।

মাইক্রোসফট, আই.বি.এম,এমাজন, গুগল এর মতো  প্রতিষ্ঠান সমূহ ক্লাউড কম্পিউটিং এর বিভিন্ন ধরণের সেবা প্রদানের পাশাপাশি ক্লাউড কম্পিউটিং এর উন্নতি সাধনের জন্য গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ও বড় ধরণের বিনিয়োগ করছে।

আমাদের দেশেও ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার এবং জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাই এই সার্ভিস গুলোর উন্নয়ন,রক্ষণাবেক্ষণ,ম্যানেজমেন্ট, এপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। সেই সাথে IoT, Big Data এর মতো কনসেপ্ট সমূহ বিশ্বব্যপী জনপ্রিয়তা পাওয়ার ক্ষেত্রেও ক্লাউড কম্পিউটিং এর একটা বড় ভুমিকা রয়েছে।

হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আমরা আবার একীভূত হতে যাচ্ছি। আমাদের ব্যবহৃত ডেক্সটপ,ল্যাপটপ, ট্যাবলেট,মোবাইল ফোন, স্মার্ট ওয়াচ, ওয়শিং মেশিন, ওভেন, টিভি সবই এক সাথে একই রিসোর্স শেয়ার করবে। ইতোমধ্যেই এই প্রযুক্তির চর্চা শুরু হয়েছে। আসুন মানবতার কণ্যানে যে সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হবে সেগুলোকে স্বাগত জানাই নিজেদের হাতে গড়ে তুলি আমাদের সুন্দর আগামী।


আপনার পরিকল্পনা, জিজ্ঞাসা, মতামত, পর্যালোচনা সবার সাথে শেয়ার করুন। নতুন নতুন প্রজেক্ট তৈরি করুনপ্রতিদিন কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করুন,টিমওয়ার্ক করুন, নূন্যতম প্রতিদিন দুই ঘন্টা করে কোডিং করুন। আসুন সবাই মিলে সমাধান করি যে কোন ধরণের সমস্যা

আজ এ পর্যন্তই। সবার জন্য শুভকামনা রইলো।

মন্তব্য নেই

আপনার মন্তব্য লিখুন

সর্বশেষ প্রকাশিত