ডার্ক এনার্জি

astronomers-see-the-universe-dying-all-around-us-489041-2এই রহস্যময় মহাবিশ্বের অনেক কিছুর রহস্যই এখনো উদঘাটিত     হয়নি. তার মধ্যে ডার্ক এনার্জি একটি, যার অনেককিছুই এখনো     অজানা রয়ে গেছে। 1990 এর দশক থেকে এটা মোটমুটি               নিশ্চিত হওয়া গেছে যে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। এমন হতে       পারে সম্প্রসারণ বন্ধের জন্য এর পর্যাপ্ত এনার্জি ডেনসিটি আছে       আবার এমনও হতে পারে যে এর এনার্জি ডেনসিটি এতো ক্ষুদ্র যে     এই সম্প্রসারণ কখনোই বন্ধ হবে না। মহাকর্ষের প্রভাবে এর           সম্প্রসারণের গতি কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। যদিও এটা দৃশ্যমান         নয়, তাত্বিকভাবে এটা প্রমাণিত. মহাবিশ্ব বস্তু দ্বার পরিপূর্ণ এবং     মহাকর্ষের আকর্ষণ বল তাদের একসাথে আকর্ষণ করে। 1998       সালের দিকে হাবল টেলিস্কোপ দ্বারা অনেক দূরের সুপারনোভা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, পূর্বে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি বর্তমান সময় থেকে অনেক কম ছিল। তার মানে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের গতি মহাকর্ষের প্রভাবে হ্রাস পাচ্ছে না, যেমনটা সবাই ভেবেছিল. কেও এটা আশা করেননি, কেও বুঝতে পড়ছিলেন না কীভাবে এর ব্যাখ্যা দেয়া যায়। কিন্তু কোনো কিছুর প্রভাবে এটা হচ্ছিল।  অবশেষে তাত্ত্বিকরা তিন ধরনের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করলেন। হতে পারে এটা আইনস্টাইন এর প্রত্যাক্ষাত মহাকর্ষ তত্ত্বের সংস্করণ যার একটিতে কসমোলজিক্যাল কনস্টেন্ট বলে কিছু একটা ছিল। হতে পারে সেখানে কিছু আশ্চর্য ধরনের এনার্জি ফ্লুইড ছিল যা দ্বারা শূন্যস্থান পূর্ণ। হতে পারে আইনস্টাইনের থিওরী অব গ্রেভিটিতে কিছু ভুল ছিল এবং নতুন কোনো থিওরী আইনস্টাইন এর থিওরীর সীমাবদ্ধতাগুলো বের করতে পারে যা এই  মহাকর্ষীয় ত্বরণ সৃষ্টি করছে. তাত্ত্বিকরা এখনো জানেন না কোন ব্যাখ্যা সঠিক। কিন্তু তাঁরা এর সমাধানের একটি নাম দিয়েছেন। যার নাম ডার্ক এনার্জি। ডার্ক এনার্জি সম্পর্কে জানা তথ্যের থেকে অজানা তথ্যই বেশী.মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ থেকে ধারণা করা যায় মহাবিশ্বে কি পরিমাণ ডার্ক এনার্জি রয়েছে।  যা একটি গুরুত্বপূর্ণ রহস্য। ধারণা করা হয় মোটমুটি মহাবিশ্বের 68% এর বেশী ডার্ক এনার্জি এবং 27% ডার্ক ম্যাটার. বাকি যা কিছু যা আমরা দেখতে পাই তা নরমাল ম্যাটার যা 5% এরও কম। একে নরমাল ম্যাটারও বলা যায় না কারণ এটি মহাবিশ্বের খুবই ক্ষুদ্র অংশ এবং বিতর্কিত। একটি ব্যাখ্যায় বলা যায়, ডার্ক এনার্জি হলো মহাশূন্যের বৈশিষ্ট. আইনস্টাইন সর্বপ্রথম অনুধাবন করেন যে শূন্যস্থান প্রকৃতপক্ষে শূন্যস্থান নয়। এর কিছু আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট রয়েছে. যার অনেককিছুই বোঝার সূচনা চলছে কেবল.আইনস্টাইনের আবিষ্কৃত প্রথম বৈশিষ্ট হলো, এমন হতে পারে যে আরও অনেক স্পেসএর অস্তিত্ত্ব রয়েছে আরেকটি হলো আইনস্টাইনের কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট যা দ্বিতীয় ভবিষ্যৎবাণী করে যে শূন্যস্থান নিজস্ব এনার্জি ধারণ করে রাখতে সক্ষম, কারণ এই এনার্জি শূন্যস্থানেরই একটি বৈশিষ্ট। মহাশূন্য যতো বিস্তৃতই হোক এটি এর সাথে মিশ্রিত হবে না। যদি আরও মহাশূন্যের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়, তত বেশি এই শক্তির অস্তিত্ত্ব পাওয়া যাবে। ফলস্বরূপ এই শক্তি মহাবিশ্বকে আরও তাড়াতাড়ি বিস্তৃত করবে। দুর্ভাগ্যবশত কেও জানে না কসমোলজিক্যাল কনস্টেন্ট কেন এখানে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং কেন এর কারণে মহাবিশ্ব ত্বরান্বিত হচ্ছে।শূন্যস্থান কীভাবে শক্তি সঞ্চয় করে তা কোয়ান্টাম থিওরী থেকে আসা অন্য একটি ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যায়।  এই তত্ত্ব অনুসারে শূন্যস্থান মূলত ভার্চুয়াল উপাদান দ্বারা পরিপূর্ণ যা প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে এবং ধংস হচ্ছে। কিন্তু যখন পদার্থবিজ্ঞানীরা গণনা করলেন যে কি পরিমাণ শক্তি এরা শূন্যস্থানে দিচ্ছে তার ফলাফল সম্পূর্ণ ভুল এলো। সংখ্যাটি এলো 10^120 অর্থাৎ 1 এর পর আরও 120 টি শূন্য।এই উত্তর ভুল হওয়াতে ব্যপারটি অনেক কঠিন হয়ে গেলো. তাই রহস্য রয়েই গেলো।  এখন ধারনা করা হলো আইনস্টাইনের মহাকর্ষ তত্ত্ব সঠিক নয়। এটা শুধুমাত্র মহাবিশ্বের সম্প্রসারণকেই প্রভাবিত করে না বরং এটা নরমাল ম্যাটার এবং ক্লাস্টার এর আচরণকেও প্রভাবিত করে। এর মাধ্যমে একটি পথ নির্দেশ করা যায় যে ডার্ক এনার্জি একটি নতুন ধরনের মহাকর্ষীয় তত্ত্ব কি না! যার মাধ্যমে আমরা দেখতে পারি গ্যালাক্সিগুলো কিভাবে একত্রিত হয়ে গুচ্ছবদ্ধ হয়। যদি মহাকর্ষের নতুন কোনো তত্ত্বের প্রয়োজন হয়, তবে সেটা কেমন হতে পারে ? কিভাবে সৌরজগতের গতির সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে ? সেটা হতে পারে আইনস্টাইনের তত্ত্ব থেকে অথবা নতুন কোনো তত্ত্ব থেকে। এখন পর্যন্ত অনেক তত্ত্ব আছে কিন্তু কোনটাই ততটা জোরালো নয়। তাই রহস্য থেকেই যাচ্ছে।

১টি মন্তব্য

  • ডার্ক এনার্জি নিয়ে সুন্দর একটা আর্টিকেল কিউরিয়াস সেভেনে লেখার জন্য Rajmoni আপনাকে ধন্যবাদ, সেই সাথে কিউরিয়াস সেভেন পরিবারে আপনাকে স্বাগতম।

আপনার মন্তব্য লিখুন

কিউরিয়াস সেভেন শীর্ষক প্রকাশনায় মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

বিভাগ সমূহ
সম্প্রতি প্রকাশিত
পাঠকের মতামত
আর্কাইভ