২০১৮ সালের কিছু চমকপ্রদ বৈজ্ঞানিক ঘটনা

দেখতে দেখতে সময়ের আবর্তনে চলে গেল ২০১৮ সাল। সময়ের ডাকে এবার আমাদের দ্বারে কড়া নাড়ছে ২০১৯ সাল। নতুনকে স্বাগতম জানানোর আগে তাই পুরাতনকে বিদায় দেবার পালা। চলুন আজ জেনে নিই বিজ্ঞানের জগতে ২০১৮ সাল কেমন ছিল। কি কি অবদান সে রেখে গেছে বিজ্ঞানের জগতে। আজকে আমরা ২০১৮ সালের উল্লেখযোগ্য চমকপ্রদ কিছু বৈজ্ঞানিক ঘটনা এবং গবেষণা সম্পর্কে জানবো।

 

১)স্কুটয়েড আকৃতি

ত্রিভুজ এবং গোলক সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমরা কি স্কুটয়েড সম্পর্কে জানি? এটি একটি নতুন আকৃতি। এর হেলানো দিক এবং নত প্রিজমিক লুক দেখতে অভিনব। যদিও এই শেপ বা আকৃতিটি সম্পর্কে আমরা আগে জানতাম না, এই আকৃতিটি সম্ভবত আমাদের ভেতরেই রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, কিছু কোষ এই স্কুটয়েড আকৃতিটি তৈরি করতে পারে যাতে করে তারা বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাঁকগুলকে শক্তভাবে বেঁধে রাখতে পারে।

 

২)আকাশে অপেক্ষারত গাড়ি

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্পেসএক্স নিক্ষেপ করেছে তাদের প্রথম “ফেলকন হেভি রকেট” বা বাজপাখির মতো ভারী রকেট। এর পেলোড ছিল নাক্ষত্রিক একটি লাল টুকটুকে টেসলা মোটরগাড়ি যা একটি মানবমূর্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে যাকে স্টারম্যান বলা হয়। এলোন মাস্ক রিপোর্টারদের বলেন, স্পেস থেকে তোলা টেসলা এর ছবি তোলা হলে গাড়িটিকে নকল মনে হয়। এর কারন হলো স্পেসে আলোকে ধুলাবালিপূর্ণ বায়ু, শৈত্য এসব অতিক্রম করতে হয় না। তাই এখানের ছবি ঝকঝকে দেখায়।

 

৩)জ্বলজ্বলে অবসান

এবছর এপ্রিল ফুল ডে তে একটি পুরনো চাইনিজ স্পেস স্টেশন আকাশ থেকে বিচ্যুত হয়ে পরে গেছে, যার নাম ছিল তিয়াঙ্গং-১। কেও জানত না কোথায় এটি পরতে যাচ্ছে কারন এর অনুপ্রবেশ ছিল অনিয়ন্ত্রিত। এর বেশীরভাগ অংশ নিচে নামতে নামতে বায়ুমণ্ডলে পুড়ে গেছে, আর এর বড় অংশগুলো পড়েছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে।

৪)পুরনো সমাধি

সুইডেন এর প্রত্নতত্ত্ববিদরা ৮০০০ বছর আগের পুরনো সমাধি খুঁজে পেয়েছেন, যা ক্ষত এবং চোয়ালবিহীন মানুষের খুলি ধারন করছে। যাদের মধ্যে দুটিতে এখনো কাঠের আঘাতের দাগ রয়েছে, যা উদঘাটন করা খুবই রহস্যজনক। তারা কারা ছিল এবং কেনই বা তাদের পানির নিচে পাথরের স্তূপের উপর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় কবর দেয়া হয়েছিল তা এখন পর্যন্ত অস্পষ্ট।

 

৫) সোর্টো ককটেল

একজন ব্যক্তি যিনি তুষার স্পর্শে প্রদাহের কারণে তার তিনটি আঙ্গুল হারিয়েছেন তিনি একটি টয়-ট্যালি তৈরি করেছেন যেখানে মানুষ স্বইচ্ছায় আঙ্গুল কেটে ডোনেট করবে একটি কানাডিয়ান বারে। যেই বারটি একটি অস্বাভাবিক পানীয় সরবরাহ করে, যাতে মমিকৃত আঙ্গুল থাকে। এই কুখ্যাত “সোর্টো ককটেল” কয়েক দশক ধরে রিমোট ইউকন বারের সিগনেচার ড্রিংক হিসেবে পরিচিত হয়ে আছে।

 

৬)গভীর মহাশূন্যের আলোকছটা

বহু দূর থেকে কেও কি আমাদের কিছু বলতে চাইছে? আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স আমাদের গবেষকদের সাহায্য করছে রহস্যময় কোড অনুসন্ধান করতে। তিন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ছায়াপথ থেকে দ্রুত ধাবমান রেডিও ওয়েভ আমাদের পৃথিবীর দিকে বিস্ফোরিত হয়েছে, যা ২০১৭ সালে ১ ঘণ্টার জন্য শনাক্ত করা হয়েছিল। বর্তমানে একটি নিউক্লিয়ার নেট অ্যানালাইসিস এর মাধ্যমে দেখা গেছে আমরা সেই একই দিনে এরকম আরও ৭২ টি লাইট ফ্ল্যাশ মিস করেছি। বিজ্ঞানীরা এখনও জানেন না কি ধরনের প্রাকৃতিক উপায়ে এধরণের শক্তির বিস্ফোরণ ঘটেছিলো।

 

বিজ্ঞানের আরও নানা চমকপ্রদ খবরে ২০১৮ ছিল ঘটনাবহুল। এখন অপেক্ষা ২০১৯ সালের, হয়তো আরও নানা বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষা করছে ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য।

 

মন্তব্য নেই

আপনার মন্তব্য লিখুন

বিভাগ সমূহ
সম্প্রতি প্রকাশিত
পাঠকের মতামত
আর্কাইভ