কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুসারে এই মহাবিশ্বের সব পদার্থকেই ওয়েভ ফাংশন বা তরঙ্গ আকারে প্রকাশ করা হয় এবং কোয়ান্টাম ওয়েভ ফাংশনকে প্রকাশ করা হয় স্রডিঞ্জারের সমীকরণের মাধ্যমে। জদিও অতিপারমাণবিক বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সহজাতভাবেই সম্ভাব্য কিন্তু স্রডিঞ্জারের সমীকরণ নিজে কোন সম্ভাব্যতা বহন করে না। যদিও প্রতিটি সম্ভাব্য পর্যবেক্ষণের সম্ভাব্যতা ওয়েভ ফাংশনের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয় কিন্তু এই পর্যবেক্ষণের পূর্বে ওয়েভ ফাংশনটি যেন নির্ণয় করা যায় সেরকম একটি রূপে প্রকাশিত হয়। এই নির্ণায়ক পদ্ধতিতে ওয়েভ ফাংশন যে আচরণ করে, স্রডিঞ্জারের সমীকরণ সেটিই বর্ণনা করে।
আমরা জানি, চার্জিত বস্তুকণা একে অপরের উপর বল প্রয়োগ করে। শূন্যস্থানে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থিত চার্জিত কণার বিভবশক্তি ভিন্ন ভিন্ন থাকে।
স্রডিঞ্জারের সমীকরণটি হলো,
-(H cut)²/ 2m ∇² Ψ+ v Ψ = i (h cut) d Ψ/ dt
শূন্যস্থানে যদি ভিন্ন অবস্থানের প্রতিটি বিন্দু থেকে লেখচিত্র আঁকা হয় তবে স্রডিঞ্জারের সমীকরণে সেই লেখচিত্রের উচ্চতাকে V দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এই উচ্চতা কোন দূরত্ব সংক্রান্ত পরিমাপকে বোঝায় না বরং প্রতি পয়েন্টে প্রতিটি চার্জিত কণার মান বোঝায়। M দ্বারা বস্তুর ভর বোঝায়। h cut এর মান হলো প্লাঙ্কের ধ্রুবক/ 2 π. Ψ দ্বারা প্রতি পয়েন্টে ওয়েভ ফাংশনের মান প্রকাশ করে। এই লেখচিত্রে ত্রিমাত্রিক মাত্রার শুধুমাত্র একটির ওয়েভ ফাংশন দেখানো হয়েছে। শূন্যস্থানের এই পয়েন্টগুলোর প্রতিটির ওয়েভ ফাংশনের মান একটি জটিল সংখ্যা, যার একটি রিয়েল কম্পোনেন্ট এবং একটি ইমাজিনারি কম্পোনেন্ট রয়েছে অর্থাৎ একটি বাস্তব এবং একটি অবাস্তব উপাদান রয়েছে। d Ψ/dx দ্বারা বুঝায়, x এর দৈর্ঘ্য সামান্য বৃদ্ধিতে ওয়েভ ফাংশনের কতটুকু পরিবর্তন হয় সেটা। ওয়েভ ফাংশনের এই পরিবর্তনটিও একটি জটিল সংখ্যা হয়ে থাকে, যদি তাদের তীর চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করি এবং x অক্ষের দিকে এর স্থান এবং দিক পরিবর্তন না করে যদি এই ওয়েভ ফাংশনগুলোকে যদি আমরা x অক্ষ থেকে শুরু করি তবে দেখা যাবে এই পরিবর্তনের মান হবে d² Ψ/ dx² . শূন্যস্থানে এই তিনটি মানের যোগফলও হয় একটি জটিল সংখ্যা,
∇² Ψ = d² Ψ / dx² + d² Ψ/ dy² + d² Ψ/ dz²
স্রডিঞ্জারের সমীকরণের বামদিকের সব প্রতীকগুলোর অর্থই আমরা জেনেছি। এবার ডানদিকের প্রতীকগুলোর দিকে খেয়াল করা যাক। আমরা আগেই জেনেছি, এই লেখচিত্রটি দ্বারা আমরা ত্রিমাত্রিক ব্যবস্থার কেবল একটি সম্পর্কে বর্ণনা করছি। সময়ের ক্ষুদ্র পরিবর্তনের সাথে প্রতিটি পয়েন্টে ওয়েভ ফাংশনের কতটুকু পরিবর্তন হবে তা যদি আমরা তীর দ্বারা চিহ্নিত করি এবং x অক্ষের দিকে এর স্থান এবং দিক পরিবর্তন না করে যদি এই ওয়েভ ফাংশনগুলোকে যদি আমরা x অক্ষ থেকে শুরু করি এবং তাকে h cut দ্বারা গুন করি তবে তাদের দৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হবে।
যদি আমরা এই তীরচিহ্নগুলোকে অবাস্তব সংখ্যা i দ্বারা গুন করি তবে প্রতিটি তীর চিহ্ন ৯০ ডিগ্রি কোণে ঘুরে যাবে। এখন প্রতিটি তীর চিহ্ন একটি জটিল সংখ্যা নির্দেশ করবে যা স্রডিঞ্জারের সমীকরণের ডানদিকের মানের সমান। সমীকরণের ডানদিকের অংশের মান সবসময়ই বামদিকের অংশের সমান। একটি বস্তুকণা যদি কেবল একটি ডাইমেনশনে চলাচল করতে থাকে তবে, স্রডিঞ্জারের সমীকরণকে আমরা লিখতে পারি,
-H cut²/ 2m d² Ψ/dx² + v Ψ = i h cut d Ψ/ dt
তরঙ্গদৈর্ঘ্য যদি ক্ষুদ্র হয় তবে d² Ψ/dx² এর মান বড় হবে। সমীকরণের উভয়পক্ষ সমান হতে গেলেও d Ψ/ dt এর মান বড় হতে হবে। d Ψ/ dt দ্বারা বুঝায় কত তারাতারি ওয়েভ ফাংশনটি ঘুরছে বা আবর্তিত হচ্ছে। তাই ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ওয়েভ ফাংশন বেশী কম্পাঙ্ক নিয়ে ঘুরতে থাকে। কম্পাঙ্ক যত বেশী হবে বস্তুকণার শক্তিও তত বেশী হবে। যদি আমরা বস্তুকণাটির শক্তির মান জানতে পারি যাকে E দ্বারা প্রকাশ করা হয় তবে স্রডিঞ্জারের সমীকরণকে আমরা লিখতে পারি,
i h cut d Ψ/ dt = E Ψ
তার মানে যদি আমরা কোন বস্তুকণার শক্তির মান জানতে পারি তবে স্রডিঞ্জারের সমীকরণটি খুব সহজভাবে প্রকাশ করা যায়। আমরা যদি প্রতি পয়েন্টের বিভবশক্তি V জানতে পারি তবে আমরা সেই সমীকরণের সব ওয়েভ ফাংশনের মান বের করতে পারবো।
সুত্রঃ Eugene Khutoryansky
মন্তব্য নেই
আপনার মন্তব্য লিখুন